শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

spot_img
Homeচাকরিবড় সংস্কারের পথে পিএসসি, বিসিএসে যেসব পরিবর্তন এল, আসছে যেসব

বড় সংস্কারের পথে পিএসসি, বিসিএসে যেসব পরিবর্তন এল, আসছে যেসব

প্রকাশঃ

বাংলাদেশের পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এবং বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কারের পথে। সরকার ও পিএসসি’র পক্ষ থেকে একাধিক পরিবর্তন এবং নতুন নিয়ম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো, পরীক্ষার স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং সময়সাপেক্ষতা বৃদ্ধি করা, পাশাপাশি চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ানো।

যেসব পরিবর্তন এসেছে:

১. নতুন প্রশ্ন প্যাটার্ন:
বিসিএস পরীক্ষায় নতুন প্রশ্ন প্যাটার্ন চালু হয়েছে, যেখানে সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশ বিষয়ক প্রশ্ন এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে প্রার্থীদের বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা থাকতে হবে।

২. ইন্টারভিউ পদ্ধতির পরিবর্তন:
ইন্টারভিউতে এবার প্রার্থীদের কেবল ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য নয়, তাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, নেতৃত্বগুণ এবং বাস্তব পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা যাচাই করা হবে। এতে প্রার্থীদের ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য তুলে ধরতে হবে।

৩. মার্কশিটের আধুনিকীকরণ:
পিএসসি পরীক্ষার ফলাফল এখন আরও বিশদভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে, যাতে পরীক্ষার্থীরা তাদের ফলাফলের প্রতিটি দিক জানতে পারেন। এতে স্বচ্ছতা বাড়ানোর পাশাপাশি, পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

  1. কিছু পদে সংশোধন:
    কিছু বিশেষ ক্যাডারের জন্য যোগ্যতার মান নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে প্রার্থীকে অতিরিক্ত বিশেষ দক্ষতার প্রমাণ দিতেও হবে।

আসছে যেসব পরিবর্তন:

১. ডিজিটাল ওভাল সিস্টেম:
পিএসসি পরীক্ষার জন্য একটি ডিজিটাল ওভাল সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা পরীক্ষার পরবর্তী ধাপে আরও স্বচ্ছতা এবং দ্রুত ফলাফল প্রকাশে সহায়তা করবে। এছাড়া, প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সম্পূর্ণ ডিজিটালি জমা দেওয়া হবে।

২. স্বয়ংক্রিয় নিয়োগ প্রক্রিয়া:
পিএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হবে, যেখানে প্রার্থীদের আবেদনপত্রের মূল্যায়ন থেকে শুরু করে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে। এতে সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া আরো দ্রুত, স্বচ্ছ এবং সহজ হবে।

৩. নতুন ক্যাডার সৃষ্টির পরিকল্পনা:
সরকারের পক্ষ থেকে আরও কিছু নতুন ক্যাডার সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেমন তথ্য প্রযুক্তি, পরিবেশ, উন্নয়ন প্রশাসন, স্বাস্থ্যখাত ইত্যাদি। এসব ক্যাডারের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

৪. বিসিএস পরীক্ষায় নতুন ভর্তির নীতিমালা:
বিসিএস পরীক্ষায় যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য নতুন নীতিমালা আসছে, যেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি, প্রার্থীদের অন্যান্য দক্ষতা যেমন কম্পিউটার জ্ঞান, ভাষাগত দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত জ্ঞানও মূল্যায়ন করা হবে।

সংস্কারের লক্ষ্য:

এই সকল পরিবর্তন এবং সংস্কারের লক্ষ্য হলো, সরকারি চাকরির প্রক্রিয়াকে আরো যুগোপযোগী, প্রতিযোগিতামূলক এবং সবার জন্য উন্মুক্ত করা। এর মাধ্যমে প্রার্থীদের জন্য আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা তৈরি হবে, যাতে দেশের প্রশাসন আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক হয়।

এছাড়া, এসব সংস্কারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সরকারি চাকরিতে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে এবং তারা এই পরীক্ষায় আরও ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

এই বিভাগের আরও সংবাদ
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত