শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

spot_img
Homeআইন আদালতভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে রিট

ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে রিট

প্রকাশঃ

রিটে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬-এর ২৯ ধারা মোতাবেক ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।

রিটকারীর আইনজীবী বলেন, ‘ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চাওয়া হয়েছে। ভারতীয় টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।

রিটের প্রেক্ষাপট

রিট আবেদনকারীরা দাবি করেছেন, ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে এমন সব অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয় যা বাংলাদেশের সংস্কৃতি, সমাজ এবং অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

  • সংস্কৃতির উপর প্রভাব: ভারতীয় চ্যানেলের সিরিয়াল, সিনেমা ও শো-গুলোতে এমন বিষয়বস্তু দেখানো হয় যা বাংলাদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে তরুণ প্রজন্ম তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ভুলে বিদেশি সংস্কৃতির দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।
  • অর্থনৈতিক ক্ষতি: ভারতীয় চ্যানেলের কারণে স্থানীয় চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনের আয় হ্রাস পাচ্ছে। বিজ্ঞাপনদাতারা বিদেশি চ্যানেলে বিনিয়োগ করছেন, যা দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
  • বিজ্ঞাপনের অনিয়ম: ভারতীয় চ্যানেলে প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলো অনেক সময় দেশের আইন অনুসারে অনুমোদিত নয়।

রিটের কারণসমূহ

  1. সংস্কৃতির বিকৃতি: অনেক ভারতীয় টিভি সিরিয়াল এবং শোতে এমন বিষয়বস্তু থাকে যা সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে।
  2. বৈষম্যমূলক প্রচার: ভারতীয় চ্যানেলগুলো বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করে না। ফলে দেশের পণ্য প্রচারে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  3. অর্থনৈতিক বৈষম্য: ভারতীয় চ্যানেলগুলো বাংলাদেশের বিপুল দর্শক প্রাপ্তি সত্ত্বেও কোনো ফি প্রদান করে না।
  4. জাতীয় স্বার্থ রক্ষা: দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং নিজের সংস্কৃতি ধারণের চেতনাকে উৎসাহিত করার প্রয়োজন রয়েছে।

আদালতে রিটের বিবরণ

রিট আবেদনটি প্রধানত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তুলে ধরেছে:

  1. সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণ: ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণ বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধের প্রস্তাব।
  2. আইনানুগতা নিশ্চিতকরণ: বিদেশি চ্যানেলের ক্ষেত্রে দেশের আইন এবং নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ।
  3. বিকল্প ব্যবস্থা: দেশীয় চ্যানেলগুলোর মান উন্নয়ন এবং দর্শকদের আকৃষ্ট করার ব্যবস্থা করা।

ভারতীয় টিভি চ্যানেলের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব

ইতিবাচক দিক:
  1. বিনোদন: ভারতীয় চ্যানেলগুলো বিনোদনের জন্য সহজলভ্য এবং জনপ্রিয়।
  2. বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়বস্তু: বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান ও শো দর্শকদের আকর্ষণ করে।
  3. ভাষাগত অভ্যস্ততা: বাংলা ভাষার অনুষ্ঠান হওয়ায় অনেকেই এটি সহজেই গ্রহণ করেন।
নেতিবাচক দিক:
  1. সংস্কৃতির ওপর প্রভাব: বিদেশি সংস্কৃতির প্রচারে দেশীয় সংস্কৃতি অবহেলিত হচ্ছে।
  2. স্থানীয় শিল্পের ক্ষতি: দেশীয় শিল্প ও সংস্কৃতি পেছনে পড়ে যাচ্ছে।
  3. অর্থনৈতিক ক্ষতি: দেশীয় চ্যানেলের বিজ্ঞাপন আয় কমে যাচ্ছে।

দেশীয় চ্যানেলগুলোর চ্যালেঞ্জ

ভারতীয় চ্যানেলের জনপ্রিয়তার কারণে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলো তাদের দর্শক ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এর প্রধান কারণগুলো হলো:

  • মানসম্মত অনুষ্ঠান তৈরি করতে ব্যর্থতা।
  • পর্যাপ্ত বাজেটের অভাব।
  • নির্দিষ্ট দর্শকশ্রেণী ধরে রাখার ক্ষেত্রে দুর্বল কৌশল।

এই সমস্যার সমাধানে করণীয়

দেশীয় শিল্পীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা এবং সুযোগ বৃদ্ধি করা।

বিদেশি চ্যানেলের উপর নিয়ন্ত্রণ:

বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার সীমিত করা বা নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে দেশীয় চ্যানেলের সুযোগ বৃদ্ধি করা।

দেশীয় চ্যানেলের মান উন্নয়ন:

দেশীয় চ্যানেলে মানসম্মত অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা করা।

বিজ্ঞাপনের মান বাড়ানোর পাশাপাশি দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী অনুষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ।

কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন:

বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন ও সম্প্রচার সম্পর্কিত নীতিমালা কঠোরভাবে প্রয়োগ।

জনসচেতনতা বৃদ্ধি:

দর্শকদের দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী করতে প্রচারণা চালানো।

অর্থনৈতিক প্রণোদনা:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

এই বিভাগের আরও সংবাদ
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত