ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সম্প্রতি একটি গবেষণায় উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে পাসপোর্ট অধিদপ্তর, বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি), এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুর্নীতিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, এই সেক্টরগুলোতে সেবা প্রার্থীরা প্রায়শই ঘুষ প্রদান বা মধ্যস্থতাকারীদের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হন।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণে সাধারণ মানুষকে অহেতুক হয়রানির শিকার হতে হয়, যেখানে সময়মতো সেবা পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রেই কর্মকর্তাদের সহযোগিতার জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়, যা আইনত অপরাধ হলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
অন্যদিকে, বিআরটিএ-তে গাড়ির নিবন্ধন, লাইসেন্স নবায়ন, ও অন্যান্য সেবা প্রক্রিয়াকরণে ব্যাপক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয় সেবা প্রার্থীদের। এই বিভাগে দুর্নীতির অন্যতম মাধ্যম হলো দালাল চক্রের সক্রিয়তা। যারা গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে দ্রুত সেবা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়। মামলার তদন্ত, গ্রেফতার, এমনকি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার মতো কাজেও অনেক সময় সাধারণ জনগণকে অর্থ প্রদান করতে হয়। এই দুর্নীতি শুধু সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না, বরং এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের উপর আস্থার সংকট সৃষ্টি করছে।
টিআইবি আরও বলেছে, এই দুর্নীতির মূলোৎপাটনে সুশাসন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সেবাখাতগুলোতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঘুষের প্রতি কঠোর শাস্তি আরোপ করা দরকার। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং একটি কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
এই গবেষণাটি সরকারের নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। টিআইবি বিশ্বাস করে, যদি সঠিক পরিকল্পনা ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তবে জনগণের সেবা প্রাপ্তি সহজতর হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।